ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগ বন্ধ, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারপিটের ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করছেন ঢামেকের চিকিৎসকরা। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
রোববার সকালে চিকিৎসকরা কজে যোগ দিলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তারা। সবশেষ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসাররা তাদের কক্ষ বন্ধ করে দেন বন্ধ করে দেয়া হয় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার। এরপর থেকেই ঢাকা মেডিকেলের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে রোগীদের। চিকিৎসক না পেয়ে হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে চলে যেতে গেছে দেখা গেছে অধিকাংশ রোগীকে।
রুমা আক্তারের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। মায়ের চিকিৎসার জন্য সকাল সকাল এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকদের শাটডাউন কর্মসূচি সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না তাদের। ফলে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও পেলেন না চিকিৎসাসেবা।
মায়ের চিকিৎসার জন্য সকাল সকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের রুমা আক্তার। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও পেলেন না চিকিৎসাসেবা। তিনি বলেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য সকালে ঢামেকে এসেছি। কিন্তু এসে শুনি ডাক্তার নাই। ভাবলাম অপেক্ষা করি ডাক্তার হয়ত আসবে। কিন্তু বিকেল ৩টা বেজে গেলেও ডাক্তার আসেনি।
রুমা আক্তার বলেন, ভেতরের স্টাফরা পরে জানাল আজ আর ডাক্তার আসবেন না। তাহলে এই কথাটা তারা আগে কেন বলতে পারল না। সারাটা দিন অপেক্ষা করে তো আমার মায়ের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে, এর দায়ভার কে নেবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সকাল থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন। গতকাল একদল বহিরাগত এসে সমস্যা সৃষ্টি করে। তারা অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে চিকিৎসকদের বের করে নিয়ে এসে মারপিট করে।
জানা যায়, শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যু হয়। এরপর ওই শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিইউবিটির শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে আসেন। ঢাকা মেডিকেলে এসে তারা দাবি করেন, অবহেলার কারণে তাদের বন্ধু মারা গেছেন।
পরে শনিবার বিকেলে দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারপিট করা হয়। এ সময় আহত হন নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান, মাশরাফি ও জুবায়ের।
নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারপিটের ঘটনায় চিকিৎসকরা দোষীদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম